নির্ভুল বার্তা ডেস্ক :
কুয়াকাটা পৌর ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলুসহ কতিপয় ছাত্রলীগ নেতার মাদক সেবন ও চাঁদাবাজির ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর শিবলু ও তার সহযোগি একাধিক নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা করেছে আবাসিক হোটেল রনি’র ম্যানেজার মোঃ মনিরুল ইসলাম। গত ২ মে পটুয়াখালী দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে এ মামলাটি দায়ের করা হয়।
পৌর ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু (২৪), মোঃ ঈসা (২০),আল আমিন (৩০), মোঃ নিশাত সহ অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে এ মামলায় আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণে জানাগেছে, গত ২৩ মার্চ সন্ধা ৭টার দিকে চাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু সহ ২০-২৫ জনের একটি গ্রæপ দেশীয় অস্ত্রে সশ্রে সজ্জিত হয়ে কুয়াকাটা-ঢাকা মহাসড়কের পাশে অবস্থিত আবাসিক হোটেল রনি’র ম্যানেজার মনিরুল ইসলামকে একটি কক্ষে জিম্বি করে ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে এবং খুন জখম সহ বিভিন্ন রকম ভয়ভীতি প্রদর্শনসহ মারধর করা হয়। দীর্ঘ সময় ভয় ভীতি দেখিয়ে ২০ হাজার টাকা নিয়ে সটকে পরে ছাত্রলীগের নেতা কর্মিরা। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে ঘটনার সাথে জরিত ছাত্রলীগের নেতা কর্মিরা মিমাংসার কথা বলে সময় ক্ষেপন করে এড়িয়ে যায়। যার কারণে মামলা করতে বিলম্ব হয়েছে বলে দাবী করা হয়।
এদিকে গত ২৭ এপ্রিল উৎপল দাস নামক একটি ফেইসবুক আইডি থেকে ওই চাঁদাবাজির ঘটনা সহ মাদক সেবনের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। ভিডিও প্রকাশের পর সেটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। এ নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে নানা আলোচনা সমালোচনা ঝড় ওঠে। মাদক ও চাঁদাবাজির ভিডিও ভাইরাল হবার পর বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে গত ২৮ এপ্রিল পৌর ছাত্রলীগ নেতা রাইসুল ইসলাম শিবলু ও বাইজিদ কুয়াকাটা প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভাইরাল হওয়া ভিডিও গুলো সুপার এডিট বলে দাবী করেন।
আবাসিক হোটেল রনির ম্যানেজার মোঃ মনিরুল ইসলাম বলেন, এরা ছাত্রলীগের প্রভাব খাটিয়ে প্রায় সময়ই হোটেলে এসে ভাংচুর সহ চাঁদার জন্য চাপ সৃস্টি করে আসছিলো। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় ২৩ মার্চ সন্ধায় মামলায় বর্নিত আসামীসহ ২০-২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী গ্রæপ হোটেলের মধ্যে ঢুকে চেয়ার টেবিল ভাংচুরসহ আমাকে মারধর করে। এ সময় তারা ৬০ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দিলে খুন জখমের হুমকী দেয়। আমি ভয়ে হোটেলের ক্যাশে রক্ষিত বিশ হাজার টাকা দিয়ে দেই। তখন হোটেলের সামনে অনেক লোকজন জড়ো হয়েছিল। এ ঘটনা তারা প্রত্যক্ষ করেছেন।
এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আঃ বারেক মোল্লা বলেন, কুয়াকাটায় ছাত্রলীগের কোন কমিটি নেই। অনেক আগেই কমিটি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বিলুপ্ত কমিটিতে এদের কোন নাম নেই। জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদারের আর্শিবাদপুষ্ট হয়ে ছাত্রলীগের নাম দিয়ে দখল দারিত্ব, মাদক ও চাঁদাবাজি সহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পরেছে কিছু নামধারী ছাত্রলীগ কর্মী। এরা বর্তমানে ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পেতে দৌড়ঝাপ শুরু করলেও কমিটি পাবার আগেই বিভিন্ন অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে পরেছে।
এ ব্যাপারে কুয়াকাটা পৌর মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ছাত্রলীগের নামে কেউ যদি চাঁদাবাজি করে থাকে তার দায়দ্বায়িত্ব তাদেরই। অন্যায় করলে আইনী গতিতে তার বিচার হবে। এখানে পৌর মেয়রের আর্শিবাদপুষ্ট বলে কিছু নেই।
মহিপুর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার হোসেন তালুকদার জানান, ছাত্রলীগের নামে চাঁদাবাজির কোন মামলার বিষয় তার জানা নেই। তার কাছে কেউ অভিযোগ করলে কিংবা আদালত থেকে কোন নির্দেশনা এলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।