পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয় বাংলাদেশের মুক্তির যুদ্ধজয়ের সংবাদ।
অনলাইন ডেক্স:
১৭ ডিসেম্বর ১৯৭১। বাঙালির মুক্তির যুদ্ধ বিজয়ের পরদিন মার্কিন সাংবাদিক কিস বিচ লিখলেন, ‘আজন্ম বঞ্চিত পূর্ব পাকিস্তান আর নেই। শত্রুভাবাপন্ন ভারতীয় ভূখণ্ডের দুই পারে, হাজার মাইল ব্যবধানে পশ্চিম ও পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে ফারাক রাত আর দিনের মতো। অবাক করা বিষয়, এরপরও তা এত দিন টিকে ছিল।’
কিস বিচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও ভিয়েতনাম যুদ্ধে সাংবাদিকতা করেছেন। কোরীয় যুদ্ধে সাংবাদিকতার জন্য পেয়েছেন পুলিৎজার। মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বিজয়ের পর তাঁর সংবাদ বিশ্লেষণটি যুক্তরাষ্ট্রের ওহাইও অঙ্গরাজ্যের দ্য জার্নাল হেরাল্ড-এ প্রকাশিত হয়।
তৎকালীন মার্কিন সরকার মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করলেও দেশটির বুদ্ধিজীবী, লেখক, শিল্পীসমাজ ও সংবাদপত্রগুলো ছিল বাংলাদেশের পক্ষে। মুক্তিযুদ্ধ গবেষক মুনতাসীর মামুন প্রথম আলোকে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ও গণমাধ্যম আলাদা দুটি প্রতিষ্ঠান। দেশটির মানুষ বাংলাদেশের পক্ষে ছিলেন। শুরুর দিকে কিছু দ্বিধা থাকলেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর হাতে গণহত্যা ও শরণার্থী ইস্যুতে তাঁরা সোচ্চার ছিলেন।
বাংলাদেশের অনলাইন ডিজিটাইজড আর্কাইভ মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভে সংরক্ষিত আছে ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের পর যুক্তরাষ্ট্রের ২২টি দৈনিক ও সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলো। ১৭ ডিসেম্বর খবর এসেছে ২০টিতে। বাকি দুটিতে এসেছে ২০ ও ২২ ডিসেম্বর।
মোট ৪৫টি শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। এর মধ্যে ৭টি সংবাদপত্র বাংলাদেশের খবর ছেপেছিল সেদিনের প্রধান সংবাদ হিসেবে।
মুক্তিযুদ্ধ ই-আর্কাইভে সংরক্ষিত এই পত্রিকাগুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যভিত্তিক ও আঞ্চলিক পত্রিকা। এর বাইরে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি, নিউইয়র্কসহ বিভিন্ন শহর থেকে প্রকাশিত জাতীয় পর্যায়ের অনেক পত্রিকায় বাংলাদেশের বিজয়ের খবর প্রকাশিত হয়।