পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি:
পটুয়াখালী জেলার দুমকি উপজেলা শাখার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ যুবদলের সদস্য সচিব সালাহ্উদ্দিন রিপন শরীফকে প্রাথমিক সদস্য সহ সকল পদ থেকে বহিষ্কার করায় সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
গত ২১ মার্চ বৃহস্পতিবার রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে পটুয়াখালী জেলা রিপোর্টার্স ক্লাবে গণমাধ্যম কর্মীদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসী ও কেন্দ্রীয় যুবদলের নেতাকর্মীদের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সালাহ্উদ্দিন রিপন শরীফ বলেন, প্রিয় সাংবাদিকবৃন্দ আসসালামুয়ালাইকুম। আমি মোঃ সালাউদ্দিন রিপন শরীফ সদস্য সচিব, দুমকী উপজেলা যুবদল ও সদস্য পটুয়াখালী জেলা যুবদল। আজ একবুক কষ্ট, যন্ত্রণা এবং লাঞ্ছনা নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়েছি। গত ১৮ মার্চ ২০২৫ইং তারিখে জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের পক্ষ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় হলো আমাকে কেন বহিস্কার করা হয়েছে তা আমি এখনও জানিনা।
প্রিয় গণমাধ্যম কর্মী ভাইয়েরা, আপনারা যেহেতু এই জেলায় দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাই আপনারা সম্পর্কে অবগত আছেন যে, বিগত আ’লীগের শাসনামলে বিএনপির সকল আন্দোলন-সংগ্রামে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমি কয়েক হাজার নেতাকর্মী সহকারে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। আমার নেতৃত্বে যুবদলসহ বিএনপি এবং অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী সংগঠিত থেকে রাজপথে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। আমার বহিস্কারের ফলে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েছে।
আপনারা জানেন, বিগত দিনে আ’লীগের অনুগত প্রসাশন আমাকে একাধিকবার হত্যা করার চেষ্টা করেছে। দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের জনগণ এবং আপনাদের বলিষ্ঠ ভূমিকার জন্য এবং আল্লাহর অসীম রহমতে বেঁচে আছি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে জোড়া খুনের মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়ে আমি এবং আমার ৮ জন আত্মীয়কে বাকশালী আদালত যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছে। এরপরও আমি আ’লীগের সাথে আপোষ না করায় ৩ টি অস্ত্র দিয়ে র্যাব অনেক নাটকীয়তা করে গ্রেপ্তার করেছে। তখন দলীয় নেতাকর্মী, জনগণ এবং আপনারা সারারাত জেগে মহাসড়ক অবরোধ এবং থানা পাহাড়ায় না থাকলে আমাকে ক্রসফায়ার দিয়ে হত্যা করতো।
আমাকে দমন করতে না পেরে আ’লীগের দুঃশাসনের আমলে রাষ্ট্রদ্রোহী, বিস্ফোরোক, ভাঙচুর, চাঁদাবাজি, মাদক মামলাসহ এমন কোনো মামলা নেই যে অভিযুক্ত করা হয়নি। বিগত ১৭ বছরে বেশিরভাগ সময়ই আমাকে জেল হাজতে কাটাতে হয়েছে। কিন্তু আমি জেলখানা কিংবা মুক্ত যেখানেই থাকি না কেন আমার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলমান রেখেছি।
বিগত দিনগুলোতে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের যেখানে পেয়েছি আমি রাজপথে প্রতিহত করতে গিয়ে অসংখ্যবার হামলারও শিকার হয়েছি। শেখ হাসিনার পতনের পর দলীয় নির্দেশনা মানতে গিয়ে আমার যে পৈতৃক সম্পত্তি আ’লীগ জবরদখল করে রেখেছে তাও উদ্ধার করতে যাইনি। শেখ হাসিনার পতনের পরও রাজপথের নির্যাতিত নেতাকর্মীরা আ’লীগের সাথে অর্থ এবং উপঢৌকন দিতে চায়। আমি গোপনে তাদের সাথে আঁতাত না করায় আমাকে দমন করতে না পেরে ফ্যাসিবাদী গোষ্ঠী এখন নিজেদের রক্ষা করতে একটি গোষ্ঠীর সাথে আঁতাত করেছে। তাঁরা কৌশলে ইতোপূর্বে সেনাবাহিনী দিয়ে আমাকে হয়রানি করিয়েছে এমনকি আমার আপন ছোট ভাই শিপন শরীফকে শারীরিক অত্যাচার নির্যাতন করিয়েছেন।
প্রিয় ভাইয়েরা, দীর্ঘদিন ধরে আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতেছে এবং দলীয় পদবী না থাকায় আমার জীবন এখন হুমকির মধ্যে রয়েছে। এই কুচক্রী মহল হয়তো এখন অর্থ এবং আওয়ামী প্রসাশনকে ব্যবহার করে মিথ্যা তথ্য যুবদলের কেন্দ্রীয় সংসদের কাছে জমা দিয়েছে কিনা তাও আমি জানতে পারিনি। আপনারা এবং দূমকি উপজেলার জনগণ জানেন রাজনৈতিক পদবীকে দায়িত্ব মনে করে মানুষের সাথে বিপদে-আপদে, সুখে-দুঃখে পাশে দাড়াই। বিনিময়ে তারাও সকল সংকটে আমার পাশে দাঁড়ান।
প্রিয় সাংবাদিকগণ, নিশ্চয়ই কোনো ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ না দিয়ে বহিষ্কার করা হয়েছ।
মহান স্বাধীনতার ঘোষক বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমানের নীতি এবং আদর্শকে ধারণ এবং লালন করে আমি রাজনীতি করে আসছি। আপনাদের মাধ্যমে রাজপথের সহযোদ্ধাদের ভরসা এবং আশ্রয়স্থল জনাব তারেক রহমান এবং যুবদলের দায়িত্বশীল কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনারা আমার অজান্তে হলেও এলাকায় খোঁজ খবর নিবেন, সত্যতা যাচাই করুন। আমার জানা সত্ত্বে দলের নির্দেশনা বহির্ভূত কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত হইনি তবুও নিজের অজান্তেও কোনো ভুলত্রুটি করে থাকলে ক্ষমা করে দিবেন।
দলীয় ইমেজ রক্ষার্থে, ভুল তথ্যের উপর ভিত্তি করে হঠাৎ করে আমাকে বহিস্কারের যে আদেশ দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করে পুণরায় দলীয় পদবীতে ফিরিয়ে দিয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে কাজ করার সুযোগ দিবেন, ইনশাআল্লাহ।