কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধিঃ
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের পেয়ারপুর গ্রামের বাসিন্দা জাহিদুল ইসলামের ছেলে তাওহিদ (৩)। জন্মের পর থেকেই দু’চোখে আবরণ, পরে পানি, জমেছে ময়লা, অসহনীয় যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে হাত দিয়ে নিজের চোখ নিজেই খুঁচিয়ে তুলে ফেলতে চায়। দেখলে যে কারো কান্না চলে আসবে।
দারিদ্র্যতা আর অর্থের অভাবে চোখের সঠিক চিকিৎসা করাতে না পারায় চিরতরে অন্ধ হতে চলেছে ৩ বছরের শিশু তাওহিদ। তার চোখের আলো ধরে রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত উন্নত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া। এতে অনেক টাকার প্রয়োজন। কিন্তু দিনমজুর পিতার সেরকম সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় তাওহিদের দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখতে আর্থিক সাহায্য প্রয়োজন। শিশু সন্তানকে অন্ধত্ব থেকে বাঁচাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ও সমাজের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছে শিশুটির পরিবার।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জন্মের পর থেকেই তাওহিদের (৩) দু’চোখে আবরণ, নেত্রনালী থেকে পানি পরে, ময়লা জমে অসহনীয় যন্ত্রণা হয়। প্রথমে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হয়। পরে ঢাকার ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে চিকিৎসার জন্য ১৫ দিন পর পর নিয়ে যেতে বলা হয় এবং তার বয়স ৬ বছর পূর্ণ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসকরা। কিন্তু ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচ বহন করতে না পেরে নিরুপায় হয়ে অসহায় পরিবারটি ঢাকা থেকে ফিরে আসে। পরে অর্থের অভাবে আর কোনো চিকিৎসা করাতে পারেনি শিশুটির। চিকিৎসা বন্ধ থাকায় শিশুটি অন্ধ হতে চলেছে।
ইস্পাহানি ইসলামিয়া আই ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের চক্ষু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার চোখের দৃষ্টি ফিরিয়ে আনতে নিয়মিত চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে এবং ৬ বছর পূর্ণ হলে অস্ত্রোপচার করতে হবে। এই চিকিৎসায় লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হবে। যেহেতু তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো না, তাই এ অবস্থায় অন্যদের সাহায্য ছাড়া তাওহিদের চোখের চিকিৎসা অসম্ভব।
শিশুটির পিতা জাহিদুল ইসলাম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘জন্মগতভাবেই আমার ছেলের চোখে সমস্যা। অর্থ-সম্পদ যা ছিলো তা ব্যয় করে চিকিৎসা করিয়েছি। বর্তমানে অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ রয়েছে। এখন চোখের সামনেই আমার ছেলে অন্ধ হয়ে যাচ্ছে, আমি কিছুই করতে পারছি না। এর চেয়ে একজন বাবার কষ্টের কি থাকতে পারে? আমার সন্তানের চোখের আলো ধরে রাখতে প্রধান উপদেষ্টাসহ সমাজের বিত্তবানদের কাছে করজোড়ে সাহায্য চাচ্ছি।’
এ বিষয়ে ডালবুগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ জিহাদী বলেন, ‘তারা আমার ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা। শিশুটির পরিবার দুঃস্থ ও অভাবগ্রস্ত। আমরা পরিবারটির পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি সমাজের বিত্তবানরা আর্থিক সহায়তা করে শিশুটিকে সুস্থ হয়ে উঠতে সহযোগী হবেন।’
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রবিউল ইসলাম বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা শিশু তাওহিদের বিষয়টি জেনেছি। তার চিকিৎসার সাহায্যের জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানাচ্ছি। শিশুটির পরিবারকে সমাজসেবা অফিসে আবেদন করার জন্য বলা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহযোগিতা করা হবে।’
তাওহিদকে সাহায্য পাঠাতে যোগাযোগ করুন–
মো. জাহিদুল ইসলাম (তাওহিদের পিতা)
মোবাঃ 01703729995 (বিকাশ পার্সোনাল)