ঢাকাWednesday , 11 December 2024
  1. আইন আদালত
  2. আন্তর্জাতিক খবর
  3. আবহাওয়া
  4. ইসলাম
  5. কুয়াকাটা এক্সক্লুসিভ
  6. খেলাধুলা
  7. জনদুর্ভোগ
  8. জাতীয়
  9. জেলার খবর
  10. তথ্যপ্রযুক্তি
  11. দূর্ঘটনা
  12. বিনোদন
  13. রাজনীতি
  14. সম্পাদকীয়
  15. সাংস্কৃতি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

দূর্গন্ধে নাকাল স্থানীয়রা- অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরী হচ্ছে নাপ্পি, বন্ধের দাবি।

rabbi
December 11, 2024 11:22 am
Link Copied!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

পার্বত্য অঞ্চলের জনপ্রিয় খাদ্য দ্রব্য ‘নাপ্পি’। এর প্রক্রিয়া করণে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ সম্মত পদ্ধতি। একদিকে যেমন মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল, অপরদিকে পা ও জুতা ব্যবহার করা হচ্ছে খাদ্য দ্রব্যে তৈরীতে। এসব প্রক্রিয়া করণ দেখে বিস্মিত অনেকেই। প্রশাসনের তদারকি না থাকায় এভাবেই ‘নাপ্পি’ তৈরির প্রক্রিয়া করণ চলছে দেধারছে। দ্রুত এসব বন্ধের দাবি জানিয়েছে পটুয়াখালী উপকূলের বাসিন্দারা।


ছোট ভুলা চিংড়ি মাছ ও অন্যান্য সামুদ্রিক ছোট মাছের মিশ্রণে দিয়ে তৈরি করা হয় ‘নাপ্পি’। সঙ্গে যোগ হয় কিছু বাড়তি উপাদান। শুরুতে তীব্র দূর্গন্ধ যুক্ত হলেও প্রক্রিয়া করন শেষে তা অনেকাংশে কমে যায়। এই খাদ্য দ্রব্য যেকোনো তরকারিতে বাড়তি স্বাদের জুড়ি নেই। এসব খাবার বেশ জনপ্রিয়তার শীর্ষে পার্বত্য অঞ্চলের উপজাতিদের। এছাড়াও বাঙালিদের খাবারের তালিকায়ও ’নাপ্পি’র’ বেশ কদর রয়েছে। প্রতিবছর শীত মৌসুমে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপকূলে শুটকি পল্লীতে চলে ‘নাপ্পি’ প্রক্রিয়াজাত করণ।


সমুদ্রের ডুবো চর এলাকা থেকে নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল পেতে শিকার করা হয় ছোট ভুলা চিংড়ি মাছ। এসব ছোট ভুলা চিংড়ি মাছের সাথে নানা প্রজাতির ছোট মাছও নিধন হচ্ছে। এসব তদারকিতে প্রশাসনের নেই কোনো ভ্রুক্ষেপ। নিষিদ্ধ বেহুন্দি জাল দিয়ে ছোট মাছ ধরা হলেও এনিয়ে কোনো মহলের তৎপরতা নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীত মৌসুমে এলেই কয়েক হাজার জেলে ট্রলার পটুয়াখালী সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে বিভিন্ন চর এলাকায় অবৈধভাবে এসব ছোট মাছ শিকার করছে। স্থানীয়রাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকাররা এসব মাছ ডাকের মাধ্যমে ক্রয় করেন। ছোট চিংড়ি মাছ থেকে তিনটি আইটেম করা হয়। এর মধ্যে প্রথমে ভুলা শুটকি, নাপ্পি এবং রাবিশের প্রক্রিয়া করণ করা হয়। এসব ছোট মাছ শুকানোর পরে তা বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে অন্যান্য প্রজাতির মাছ আলাদা করা হয়।


নাপ্পি তৈরীতে প্রথমে নির্দিষ্ট স্থানে পঁচানোর জন্য স্তুপ করে রাখা হয়। পঁচা চিড়িং মাছ প্রথমে রোদে হালকা শুকিয়ে পরে অপরিষ্কার খালি পায়ে বা জুতা পড়ে পাড়ানো হয়। পা দিয়ে পিশে আবার রোদে শুকানো হয়। রোদে শুকিয়ে রাখা ভুলা চিংড়ি মাছের সাথে লবণ এবং বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো হয়। এভাবে করে ‘নাপ্পি’ প্রক্রিয়া করণ শেষ করতে ৫-৬ দিন সময় লাগে। এসব খাদ্য দ্রব্য দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে পার্বত্য অঞ্চলের আদিবাসীদের খাবারের জন্য এসব তৈরি করা হয়।

সরেজমিন পটুয়াখালীর মহিপুরে নিজামপুর শুটকি পল্লী এলাকায় কক্সবাজার থেকে আসা ব্যবসায়ীসহ ২ শতাধিক মানুষ ‘নাপ্পি’ তৈরিতে কর্মব্যস্ত সময় পার করছে। তবে স্থানীয় অন্য ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব যে পদ্ধতিতে ‘নাপ্পি’ তৈরি করা হচ্ছে তা নিঃসন্দেহে মানব দেহের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

এবিষয়ে কথা হয় শুটকি পল্লী এলাকার কমরপুরের বাসিন্দা ও শুটকি ব্যবসায়ী মো. সাইফুলের সঙ্গে। তিনি জানান, নাপ্পি তৈরীর কারনে পুরো পল্লী এলাকায় তীব্র দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে আমাদের খুব কষ্ট হয়। এসবের সাথে বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো হয় যা চরম স্বাস্থ্য ঝুঁকি। খালি পেটে এসবের কাছে গেলে বমি চলে আসে। এসব যতোই সুস্বাদু হোকনা কেন, তৈরি করণ কেউ নিজ চোখে দেখলে আর খাবেনা।

একই অভিযোগ করেন শুটকি পল্লীর আরেক ব্যবসায়ী রাকিবসহ আরো কয়েকজন। তারা বলেন, যে পরিবেশে নাপ্পি তৈরী করণ চলছে তা আসলেই স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে করা হচ্ছে না। প্রশাসনের যাতে এসব তদারকি করেন এবং স্বাস্থ্যকর পরিবেশে প্রক্রিয়াকরণ করা হয়। নতুবা এসব বন্ধের দাবি জানান তারা।

কক্সবাজার থেকে আসা ‘নাপ্পি’ ব্যবসায়ী মো. বাবুল বলেন, মূলত শীত মৌসুমে আমাদের এলাকায় এসব মাছ কম পাওয়ায় আমরা পটুয়াখালী এসে ‘নাপ্পি’ তৈরি করি। আমাদের পার্বত্য অঞ্চলে একটি জনপ্রিয় খাবার নাপ্পি। যা আদিবাসীসহ আমরা খাই। এতে কোন স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। তবে লবণ মেশানো এবং পা দিয়ে পারানোর বিষয়ে স্বীকার করলেও বিষাক্ত কেমিক্যাল মেশানো হয়না বলে জানান তিনি।

চট্রগ্রামের আরেক ব্যবসায়ী আবুল কালামের সাথে কথা হলে তিনিও বলেন, ভালো মাছ প্রথমে স্তুপ করে রেখে এরপর রোদে হালকা শুকিয়ে পারানো হয়। এরপর নাপ্পি তৈরী করা হয়। এতে ৫-৬ দিন সময় লাগে। তবে স্বাস্থ্যকর পরিবেশে করা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।

নাপ্পি তৈরী করণ হারভেষ্টর পদ্ধতিতে হয় বলে জানান কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা।

তিনি বলেন, সামুদ্রিক ছোট মাছ থেকে তৈরী হওয়া ‘নাপ্পি’ আদিবাসীদের একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি অবশ্যই স্বাস্থ্য সম্মত পদ্ধতিতে করতে হবে। আমরা খোঁজ খবর নিয়ে দেখবো। যদি নিয়ম বহির্ভূত এসব প্রক্রিয়া করণ করা হয় তবে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নিব।

এবিষয়ে পটুয়াখালী জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকতা আবু রায়হান প্রতিবেদকে জানান, মহিপুর এলাকায় যে ‘নাপ্পি’ তৈরি হয় তা আমার জানা নেই। আমরা নাপ্পি’র স্যাম্পল কালেলশন করে আমাদের ল্যাবে টেষ্ট করে দেখবো।

যদি কোন ক্ষতিকর ক্যামিকেল বা ব্যাকটেরিয়া-ছত্রাকের মতো জীবানু পাওয়া যায় এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি করা হয় তাহলে তা বন্ধে দ্রুত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।