ঢাকাFriday , 4 February 2022
  1. blog
  2. dating
  3. Mail Order Brides
  4. Online dating
  5. অপরাধ
  6. আইন আদালত
  7. আন্তর্জাতিক খবর
  8. আবহাওয়া
  9. ইসলাম
  10. কুয়াকাটা এক্সক্লুসিভ
  11. খেলাধুলা
  12. জনদুর্ভোগ
  13. জাতীয়
  14. জেলার খবর
  15. তথ্যপ্রযুক্তি
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কুয়াকাটায় বেরীবাঁধ সংস্কারের নামে উজাড় করা হচ্ছে বনাঞ্চল

rabbi
February 4, 2022 2:37 pm
Link Copied!

কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা :
কুয়াকাটায় বেরীবাঁধ সংস্কারের নামে বনাঞ্চলের হাজার হাজার গাছ উজাড় করা হচ্ছে। দীর্ঘ বছরের এসব পুরানো বড় বড় গাছ স্কুভিটার (ভেকু) দিয়ে উপড়ে ফেলা হচ্ছে। এমনকি বনের গাছ উজাড় করে কেটে নেয়া হচ্ছে বনের মাটি। এভাবে মাটি কেটে বনের ভিতর দিঘির মত বড় বড় পুকুর খনন করা হয়েছে। বন ও পরিবেশ আইনের তোয়াক্কা না করেই চায়না সিকো কোম্পানী ও কোম্পানীর দেয়া সাব ঠিকাদাররা বছর ধরে বন ধ্বংস করে আসলেও নির্বাক বনবিভাগ সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। ২০২১ সালের ১০ মার্চ গঙ্গামতি বিট কর্মকর্তা মহিপুর রেঞ্জ অফিস বরাবরে একটি অভিযোগ পত্র দায়ের করার মধ্যদিয়ে তাদের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য শেষ করেছেন। নেয়া হয়নি কোন আইনগত ব্যবস্থা। কুয়াকাটা ৪৮নং পোল্ডারের গঙ্গামতি ও খাজুরা সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বন উজাড় করে এমন ধ্বংস যজ্ঞ চালানো দেখে হতবাগ স্থানীয়রা। এভাবে বন উজাড় করা হলে পরিবেশ ভারসাম্যহীন হয়ে পরবে কুয়াকাটাসহ উপকূলীয় অঞ্চল।
গত ১বছরে পটুয়াখালী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সহ স্থানীয় রেঞ্জ কর্মকর্তারা একাধিকবার পরির্দশন করে বন ধ্বংসের এমনচিত্র স্ব-চোখে দেখলেও নেয়া হয়নি কোন আইনী ব্যবস্থা। বেরীবাঁধ সংস্কারের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদার থেকে শুরু করে প্রকল্প প্রকৌশলীরা বলছেন বনবিভাগের সাথে সমন্নয় করেই তারা বনের ভিতর থেকে মাটি কাটছেন। প্রতিদিনই বনবিভাগের কর্মকর্তারা উপড়ে ফেলা গাছ কেটে সরিয়ে নিচ্ছেন এমনটাই বক্তব্য ঠিকাদারদের। ব্যবস্থা নিচ্ছি, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের কথা শুনছেন না এমন দ্বায়সারা বক্তব্য দিয়েই তাদের দ্বায়িত্ব ও কর্তব্য শেষ করেছেন স্থানীয় বন কর্মকর্তারা। এমন ধ্বংস যজ্ঞের সাথে সরাসরি বনবিভাগ জড়িত বলে জানান অনেকেই।
স্থানীয়রা ভয়ে এসব ধ্বংস যজ্ঞের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। বন উজাড় করে মাটি কেটে নেওয়ার ফলে পরিবেশের উপর মারাক্তক প্রভাবের আশংকা প্রকাশ করছেন পরিবেশ আইনবিদরা।
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চায়না সিকো কোম্পানী ও বনবিভাগ সুত্রে জানাগেছে, ২০১৭ইং থেকে ৬ বছর ধরে উপকুলীয় বেরীবাঁধ সংস্কার কাজ চলে আসছে। বেরীবাঁধ সংস্কারের মাধ্যমে উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেস্টনী গড়ে তোলা প্রকল্পের উদ্দেশ্য। উপকুলীয় এলাকার মানুষকে জ¦লোচ্ছাস থেকে রক্ষা করাই এই প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বলে জানাযায়। অথচ এখানে হচ্ছে এর উল্টোটা। বনের বড় বড় গাছ উপড়ে ফেলা হচ্ছে। বনের মধ্যে বড় বড় পুকুর এবং দিঘি কেটে মাটি নিয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে বেরীবাঁধে। এসব হচ্ছে বনবিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায়।
জানাগেছে, চায়না সিকো কোম্পানীর বেরীবাঁধ সংস্কার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এরপর চলতি বছরের জুন পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে। ওই কোম্পানিটি কাজের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য দুই দফায় সময় নিয়েছে। উক্ত বর্ধিত মেয়াদের মধ্যে ৮০ ভাগ কাজ শেষ করতে না পারলে প্রকল্প বাতিল হয়ে যাবে। কাজ শেষ করতে না পারার সংকায় ঐ কোম্পানিটি স্থানীয় সাব ঠিকাদারদের কাজ ভাগ করে দিয়েছেন। সে কাজ নিয়েও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, কুয়াকাটার ৪৮নং পোল্ডারের খাজুরা ও গঙ্গামতি সংরক্ষিত বনের মধ্যে চারপাশে বন মাঝখানে বড় বড় দিঘি কাটা হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও খাল কেটে মাটি নেয়া হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেরীবাঁধের ¯েøাভ থেকে প্রায় চার’শ থেকে পাঁচ’শ মিটার বনের ভিতর থেকে বন উপড়ে ফেলে মাটি নেয়া হয়েছে। এখনও চলমান রয়েছে এসব ধ্বংস যজ্ঞ। যেমন খুশি তেমন চলছে বেরীবাঁধ সংস্কার কাজ।
বেরীবাঁধ সংস্কারে মাটি বাহির থেকে কিনে সংস্কার কাজ করার কথা থাকলেও ঠিকাদাররা বনবিভাগের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বনের ভিতর থেকে মাটি নিয়ে ব্যবহার করছে বেরীবাঁধে। বিশেষ করে বনের লবনাক্ত পলিমাটির সাথে বালু যুক্ত এসব মাটি ব্যবহারে তৈরী হচ্ছে নাজুক বেরীবাঁধ। স্থানীয়দের মতে এ বেরীবাঁধ টিকসই হবে না। এছাড়া নিরবে বেরীবাঁধের অনেক জায়গায় পুকুরের মত গর্ত করে বালু দিয়ে তার উপরে মাটির প্রলোভ দেয়া হচ্ছে। চায়না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা স্থানীয় কতিপয় প্রভাবশালীদের যোগসাজশে এসব অনিয়ম করে যাচ্ছে বীর দাপটে। প্রকল্পের ডিজাইন ও নিয়মবহির্ভূত কাজ করা হচ্ছে।
এই কাজের তদারকি কর্মকর্তা প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলছেন ঠিকাদাররা ভালো নয়। তারা তাদের কথা শুনছেন না। রাতের আধাঁরে বালু দিয়ে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে কথা হয় সাব ঠিকাদার মহসিন ও জামালের সাথে। তারা জানান, তাদের মাটির দাম ধরা হয়েছে খুবই কম। যা দিয়ে মাটি ক্রয় করা সম্ভব নয়। এটাকা শুধু মাটি আনা নেওয়ার কাজেই ব্যয় হয়ে যায়। তিনি আরও জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং বনবিভাগের কর্মকর্তাদের সমন্নয়ে বনের ভিতর থেকে মাটি কেটে নিচ্ছেন তারা। প্রতিনিয়ত বনবিভাগের কর্মকর্তারা দেখাশুনা করছেন। মাটির মান নিয়ে তিনি বলেন, মাটি পাওয়া যাচ্ছে না, তাই বনের পলিমাটি ব্যবহার করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। এ মাটি ব্যবহারে প্রকল্প প্রকৌশলীদের সম্মতি আছে।
কুয়াকাটার বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোঃ আবুল কালাম বলেন, বন উজাড় করে বনের ভিতর থেকে মাটি কেটে বেরীবাঁধে ব্যবহারের বিষয়ে স্থানীয় বিট কর্মকর্তা ২০২১ সালের ১০ মার্চ একটি লিখিত অভিযোগ তার কাছে দিয়েছেন। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদেরকে অবহিত করা হয়েছে। কোন মামলা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা পেলে মামলা করা হবে।
এ বিষয়ে সবুজ বেস্টনী প্রকল্পের প্রকল্প প্রকৌশলী মোঃ মজিবুর রহমান বলেন, গাছ উপড়ে ফেলে বনের ভিতর থেকে মাটিকাটার বিষয়ে তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে কাজ বন্ধ করে দেয়া হবে। অপরদিকে কাজের অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে এসে প্রকল্পের সচিব, পরিচালকসহ একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করে গেছেন। পরিদর্শন রিপোর্ট দিলে এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবেন তারা।
এ ব্যাপারে পরিবেশ আইনবিধ সমিতি (বেলা) বরিশাল বিভাগীয় সমন্নয়কারী লিংকন বায়েন বলেন, বন উজাড় করে বনের ভিতর থেকে মাটি নিয়ে বেরীবাঁধ সংস্কার করা বন ও পরিবেশ আইনে কোনভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। পরিবেশ প্রকৃতি ধ্বংস করে বনের ভিতরে পুকুর বা দিঘি কাটা আইন বিরোধী কাজ। বনবিভাগ তাদের দ্বায়িত্ব কর্তব্য পালন না করে এতে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ সমর্থন করে নৈতিকতা বিরোধী কাজ করছেন। সবুজ বেস্টনী প্রকল্পের নামে এমন ধ্বংস যজ্ঞ কর্ম পরিবেশের উপর মারাক্তক হুমকী বয়ে আনবে বলে এই পরিবেশবিধ মনে করেন।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।